Monday, November 18, 2019

ইসহাক মাহমুদ এর অণুকাব্য (১-৩০)

ইসহাক মাহমুদ এর
অণুকাব্য

১)
আমাদের আকাশে ঘনঘন মেঘ জমেনা
কারো মনে রাগ জমিলে খুব সহজে তা কমেনা,
আমাদের সীমান্তে সব মানুষের জায়গা হয়না
শান্ত পাখি বোবা হলে খুব সহজে কথা কয়'না। 

২) 
আমি যারতার ভালোবাসায় মজি নাহ,আমি যার তার ভালোবাসায় মজি। 
আমি যারতার কাছে যেতে চাইনা,আমি যার তার কাছে যেতে চাই। 
আমি যারতার রূপের প্রশংসা করিনা,আমি যার তার রূপের প্রশংসা করি। 
আমি যারতার জন্য কাব্য বুনি নাহ,আমি যার তার জন্য  কাব্য বুনি। 

৩) 
তারা'রা জেগে আছে কিনা দেখো
জোনাকি'রা দিচ্ছে কি আলো?
আকাশের মতো বিশাল হতে শেখো
মনের মানুষ যেথায় থাকুক; মন রেখো ভালো।

৪) 
পূর্ণতায় ভাসি-ডুবি
শূন্যতার বালাই নাই,
একাকীত্ব আর বলেনা
আমার একটা তুমি চাই। 

৫) 
যদি নাম বদল করেলেই মানুষ বদলে যেতো,
তবে অমানুষ গুলো রাত পেরুলেই টাটকা মানুষ হতো। 

৬) 
পৃথিবীর দূরত্ব তুমি মাপতে পারো অনায়াসে
মনের দূরত্ব মাপার সাধ্য তোমার আদৌও নেই,
ভেবে দেখো- ভালোবেসেছে কেউ তোমায় প্রকাশ্যে
সে বিলীন হয়নি,তবে বিলীন করেছে তোমাকেই। 

৭) 
যে মানুষটার বন্ধু নাই
সেই মানুষটা কষ্ট পায়,
যে মানুষটার বন্ধু আছে
সেই মানুষটা হাসতে হাসতে বাঁচে।

৮) 
রাতের আকাশ কালো হলে
জ্যোৎস্না হারায় আলো,
প্রিয়জনের অসুখ বাধলে 
মন থাকেনা ভালো। 

৯) 
বুকের ভিতর পুষে রাখি দুঃখ দিবানিশি, 
হয়না দেখা হয়না কথা তাতেও নই খুশি।  
আমার  কষ্ট জমে নষ্ট মনে থাকে বারোমাস, 
আমি তোমায় চেয়ে মনের ভুলে ডেকে আনি সর্বনাশ ।  

১০) 
আমি দূরে দূরে যাই আরও দূরে সরে
কাছে আসার সব আয়োজন মিথ্যে করে,
পৃথিবীর টানে কিংবা তোমাদের ভুলতে গিয়ে
আমি দূরে দূরে যাই আরও দূরে যাই মিলিয়ে। 

১১) 
আমৃত্যু ভালোবেসে যাবো লিখে নাও,
মৃত্যুর পরে মনে আসন দিবে কথা দাও। 

১২) 
আকাশ জুড়ে মেঘ জমেও
মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়না,
হৃদয় মাঝে ক্ষত হলেও
মানুষ তারে কষ্ট কয়'না। 

১৩) 
লিখার জন্য একটি সৎ চরিত্র খুঁজে বেড়াই,
অথচ সব চরিত্র-ই বেঈমানী করে চলে যায়। 

১৪) 
সব মানুষ সব মানুষের 
ভালোবাসার কারণ হয়না,
সব মানুষকে সব মানুষের
ভোগবিলাসী মনে সয় নাহ। 

১৫) 
যখন আমি তোমার ছিলাম নানান বাহানায়
তখন কেবল তুমি ছিলে আমার কল্পনায়,
যখন আমি আমার হলাম তুমি ছাড়ার পরে
তখন সবাই আমার হলো কাব্যকথার সুরে৷

১৬) 
আকাশ ছুঁইছুঁই গল্পে কারো
নাম লিখিনি খাতায়, 
ঠাঁই মিলেনি কাব্যে কেউ
ঠাঁই মিলেনি চিত্রের পাতায়। 

১৭) 
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা
জ্যোৎস্না রাতের আলো,
তারও চেয়ে সুন্দর তুমি
তোমায় বাসি ভালো। 


১৮) 
আমার বিষন্নতা তোমায় করেনি গ্রাস
হওনি কখনো দোষী, 
আমার এলোমেলো ভাবনার ছিলেনা ত্রাস
চেয়েছি তুমি হও খুশি। 


১৯)
সে যে ভীষণ ব্যস্ত এখন
আড়াল হতে চায়,
অন্ধকারে আলো জ্বেলে 
তার অস্তিত্ব বুঝায়।


২০) 
সিন্ডিকেটের মারপ্যাঁচে দেশটা এখন জিম্মি 
রসাতলে গেলো ডুবে সব ই,
বাড়ছে সবার হয়রানি তাই সস্তায় নাই সদাই
নানান দিকে ছড়াচ্ছে ভোগান্তির মূল ছবি। 

 
২১) 
তোমার আমার এক-জনমের দূরত্ব 
ভালোবাসায় একশো একটা বাধা,
এই ভুবনে জমছে নাহ প্রেম আর
ভালোবাসতে গেলেই দেখি চোখে গোলকধাঁধা। 

২২) 
সাগরের ঢেউ আমাকে ভীষণ টানে
বাতাসের প্রতিধ্বনি বুঝেনা তার মানে,
আমি সাগরকে উদ্দেশ্য করে বলে যাই -
হৃদয়ের সব অব্যক্ত কথন, 
বাতাস এসে মিলিয়ে দিলো কথাগুলো 
বাধতে দিলোনা "হৃদয়ের কানেকশন"। 

২৩) 
দিয়াশলাই'য়ের কাঠি দিয়ে 
মোমবাতি টা জ্বালাও,
আলোর ভিতর ঝলসে গিয়ে
আরো আলো দাও। 

২৪) 
সুখের পাখি যায়'রে উড়ে
পেখম তুলে আকাশে,
সুখটা আমার সয়'না মনে
মুখটা যে হয় ফ্যাকাসে। 

২৫) 
আমি বরং হেসেখেলে-ই বাঁচি
নিকষ কালো অন্ধকারে, 
তুমি বাঁচো আলোর শহরে
অন্য কারো সংসারে। 

২৬) 
সাগরের তীরে মানুষের ভীড়ে
হারানোর আশা পেলে ভালোবাসা,
ঢেউয়ের প্রেমে বাতাসের ছোঁয়ায় 
জমতো ভালোবাসা এই মন পাড়ায়। 
ফেলে আসা স্মৃতি জমানো ছবি
মুগ্ধতায় মুখোর আমি হয়েছি কবি,
হৃদয়ের কথা লুকানো ব্যাথা 
মিলিয়ে দিও তলিয়ে দিও এসে হেথা।

২৭) 
ফের কবে দেখা হবে আমাদের
ডায়েরিতে রেখেছো কি লিখে?
এই গল্পের শেষ  কোথায় গিয়ে!
ঘুম ভাঙ্গলে জানিয়ে দিও ডেকে। 

২৮) 
আস্ত একটা মন নিয়া 
পড়ছে মানুষ বেকায়দায়, 
এদিক থেকে ওদিক হলেই 
এক নিমিষেই জ্বলে যায়। 

২৯) 
আমি তারে অদেখাতেই দেখেছি বহুবার
স্বপ্নের ঘোরে বহুবার নিয়েছি পিছু,
তার নাম কি! গ্রাম কই! স্পষ্ট সে দেখতে কেমন!
জানা হয়নি আজও তার ব্যাপারে কিছু। 

৩০) 
"ভালোবাসা" শক্ত করে ধরতেই শিখায়। 
          নরম হাতের ধরায় -
 ভালোবাসা উড়ে যায়,পুড়ে যায়,
ছেড়ে যায়,দূর থেকে বহুদূরে যায়।



No comments: