Thursday, November 21, 2019

ইসহাক মাহমুদ এর অণুকাব্য (৩১-৬০)

ইসহাক মাহমুদ এর
অণুকাব্য 


৩১) 
হে প্রিয় স্বদেশ-
সবুজের বুকে রক্তের দাগ
ভুলিনি আজও মোরা,
তোমায় বাঁচাতে লাখো প্রাণ শহীদ
লাখো প্রাণ গিয়েছে পোড়া। 
তোমাকে বাঁচাতে সম্ভ্রম হারিয়েছে মা
বোনের ইজ্জতে পড়েছে কালি,
তবুও তোমায় বাঁচিয়েছিল সবে
দিয়েছিল সবে জীবনের বলি। 

৩২) 
আপন মানুষ না পেলে
মানুষ কেন যায় চলে!
মনের ভিতর প্রশ্ন জাগে,
জীবন দিচ্ছো কিসের রাগে?
আত্মহত্যা মহাপাপ 
সেটা সবাই জানে
তবুও ক্যান মানুষ মরে; 
ভালোবাসার টানে! 

৩৩) 
বরং আমি চাঁদ'কেই ভালোবেসে রাত পাড় করি
জীবন্ত প্রেমিকার কাছে ভালোবাসা যেখানে মূল্যহীন, 
ব্যস্ত নগরীতে প্রেমিকারা যখন উপেক্ষা করে যায়
চাঁদ দিয়ে যাচ্ছে ভালোবাসা;করছে ভুবন নিশিতে রঙিন ।

৩৪)
এরপর আর কোনো কথা নেই- 
একদম চুপ থাকো তুমি 
কিসের এতো কথা তোমার?
ভালোবাসবে এটাই বেশি
অল্প কথায় থাকো খুশি 
ব্যস্ত আমি অন্যদিকে,ব্যস্ততা খুব আমার। 

৩৫) 
চাঁদের শহর পাড়ি দিবো 
হাটতে হাটতে চাঁদে যাবো-
সঙ্গে যাবে নাকি? 
সিড়ি মই কই পাবো 
ভড়কে গিয়ে থমকে রবো-
দিবে না তো ফাঁকি? 
চাঁদে যাবে নাকি কন্যা 
চাঁদে যাবে নাকি? 

৩৬) 
ঠেলে দিলেই কাঁদেনা সবাই
হাসা'র লোকও আছে,
কান্নাকাটি দাফন করেই
হাসতে হাসতে বাঁচে। 

৩৭) 
সন্ধ্যে নামা আকাশটা'তে
কাব্য ছুড়ি তোমার নামে,
আমার মনের পোস্ট অফিসে 
চিঠি আসেনি কোনো খামে!

৩৮) 
কালো ঘরেই ভালো থাকে
ছেড়ে যাওয়া প্রিয়জন,
বাঁচিতে বুঝেনা মনের মানুষ 
মরিলে করে আপন। 

৩৯) 
কাজল চোখে রঙিন ঠোঁটে 
মনে দিও চোট,
তোমার মনে নির্বাচন হলে 
একা-ই দিবো হাজার ভোট। 

৪০) 
হাসির ছলে কথা বলে
দুঃখের করি খোঁজ, 
সুখটা আমার ভিতর বাহির
দুঃখ টা নিখোঁজ। 

৪১) 
চক্ষু দিয়ে ঘায়েল করে
বুকের ভিতর মারো পিন,
এপাশ ওপাশ চৌচির হয়ে
ব্যথায় হৃদয় করে চিনচিন। 

৪২) 
তোমার ভিতর আমায় একটু
বাঁচতে দিও প্লিজ,
দিব্যি তোমায় বাসবো ভালো 
করছি যে প্রমিজ। 

৪৩) 
তোমার অস্তিত্ব জুড়ে আমি নই বিদ্যমান,
আমার শিরা উপশিরায় তুমি রয়েছো বর্তমান।

৪৪) 
সে চায়-
আমি যেনো তারে ভালোবেসে যাই,
আমি একগাল হেসে নিশ্চুপ হয়ে বলি
ভালোবাসা তোরে লাল সালাম;জানাই বিদায়, 
তবুও সে চায়-
আমি যেনো তারে ভালোবেসে যাই। 

৪৫)
শিকলে বন্দী করে আমায়
নিজেকে করেছো নিজে খুন,
পারিনি আমি ভাঙ্গতে শিকল
আঘাতে আঘাতে হয়েছি অনুভূতিহীন। 

৪৬) 
বিপদ এলেও হাসতে জানি
      চেপে রেখে বুক,
  যা হবার তা হবেই হবে
গোমড়া হবেনা তবুও মুখ।

৪৭) 
ভাইরাল হওয়ার ভয়ে আমি
চুমু পাঠাইনি চ্যাটে,
'ভালোবাসি' মুখেই বললাম
চুমু রেখেছি ঠোঁটে। 

৪৮) 
আমি জগদ্বিখ্যাত প্রেমিক নই,
তোমায় দেখে তবুও কেনো
তোমার প্রেমে আক্রান্ত হই!
বিশ্বাস করো মায়াবতী -
আমি জগদ্বিখ্যাত প্রেমিক নই। 

৪৯) 
সন্ধ্যে হলেই অন্তর জ্বালাও
রাত্রি হলেই ঘুম কাড়ো,
মন নিয়ে খেলা করার
অভ্যাস টা এবার ছাড়ো৷ 

৫০) 
প্রেমিকার ঠোঁটের উষ্ণ তাপ
 তুমি ছুঁয়ে দেখো না বালক
        পাপ হবে পাপ। 

৫১) 
চোখ দুটো টলোমলো 
মুখ জুড়ে হাসি,
মনের শহরে বিচ্ছেদ বাধানো 
আসামির হউক ফাসি৷

৫২) 
আমি এমন একটা মানুষ  চাই
আমার মনের দামে,
বিশ্বজুড়ে চিনবে তারে
সবাই এক নামে।

৫৩) 
মায়ায় বেঁধো না আমায়
মায়া'তেই যত ভয়,
মায়ায় আটকে নষ্ট করেছি সময়
ভালোবাসার হয়েছে অবক্ষয়। 

৫৪) 
তুমি আরো ঘৃণা করো
আমি আরো সুখী হই,
সমালোচনার ঝড় তোলো বারংবার 
আমি যেন সবার আলোচনায় রই।

৫৫) 
চোখের ইশারায় প্রেম নেই
ঠোঁটের ইশারাতেও খুঁজলে হবে ভুল,
মনের ইশারায় প্রেম খুঁজে দেখো
হাত বাড়ালেই পাবে লাল গোলাপ ফুল।

৫৬) 
শব্দ প্রেমীরা-ই শব্দ নিয়ে খেলে
ছন্দের পাহাড় সাজায় নতুন শব্দ পেলে,
ভিন্নভাবে করে তারা কাব্য কথার গঠন 
শব্দের শূন্যতাকেই ভাবে তাদের পতন৷ 

৫৭) 
গলে গিয়ে বলে দাও ভালোবাসি প্রিয়
বিরহ ভুলে গিয়ে আপন করে নিও,
দুঃখের বেড়াজালে থেকো না বন্দী 
চোখেচোখে চোখ রেখে গড়ে তোলো সন্ধি। 

৫৮) 
নিজের মত বাঁচতে শিখো
নিজের মতই হাসো,
অন্যের মত হতে গিয়ে
সমুদ্রে কেন ভাসো?
হাসিটাকে আপন করেই
পা বাড়িয়ে চলো,
অন্যের কথায় থমকাবে কেন?
সেটা আমায় বলো।

৫৯) 
নিয়তির আঘাতে ভাঙ্গে যে ঘর
সে ঘরেই দাফন করে আপন হয় পর,
সময়ের ব্যবধানে নতুন যারা আসে
ক্ষত হওয়া হৃদয় দেখে তারাও মুচকি হাসে৷ 

৬০) 
আমাদের কোনোকালেই প্রেম ছিলোনা এই জগতে
আমরা একে অপরকে ভালোবাসতাম,
আমাদের সবাই  পাগল বলতো অযথাই 
আমরা শুনে অকারণেই খিলখিলিয়ে শুধু হাসতাম। 


No comments: