Monday, July 29, 2019

আলোকিত স্বপ্ন

একটা আলোকিত স্বপ্ন দেখেছিলাম-
যে স্বপ্নের প্রতিটি মুহূর্ত
তোমাকে নিয়ে সাজানো,
তোমার উপস্থিতি-
পুরো স্বপ্নটাকে রংধনুর সাত রঙের মতোই অপূর্ব করে তুলেছিল।
তখন কেবলমাত্র এটাই মনে হচ্ছিলো,
এমন একটা মূহুর্তের জন্যেই বুঝি এতগুলো বছর অপেক্ষা করছি আমি।
এই বুঝি-
আমার স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে,
এই বুঝি-
তোমাকে নিজের একান্ত সম্পদ বলে
দাবি করার সময় হয়ে গেলো,
এই বুঝি-
তুমি আমার পুরো শহরটাকে
রূপের আলোয় আলোকিত করে
আমার মনের ঘরে প্রবেশ করছো।

আচ্ছা-
স্বপ্ন দেখতে গেলে বুঝি মানুষ উন্মাদ হয়?
দিক হারিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়?
প্রেমে কি এমন আছে,
যার কারনে মানুষ নিজেকে নিঃশেষ করে?
ভালোবাসা কি এমন জিনিস,
যেটা মানুষকে পাঁচতলা থেকে গাছতলায় নিয়ে আসে?
কি এমন অনুভূতির কারনে
মানুষ বাদশা থেকে ফকির হয় কিংবা ফকির থেকে বাদশা হয়? কিছু জানো?
নাকি অজান্তেই ভালোবাসো?

একটা কথা জানো-
সব মানুষ ভালোবাসতে জানেনা,
ভালোবাসার বিরোধিতা করার মানুষও আছে।
এই সমাজের কিছু মানুষ আছে
যারা নিজে ভালোবাসতে চাইবে,
কিন্তু অন্য কেউ ভালোবাসার দাবি নিয়ে তার পরিবারের কাউকে চেয়ে বসলেই তাকে মেরে ভালোবাসার গুষ্টি উদ্ধার করে দেয়।
এরাও নিজেকে প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা বলে দাবি করে!
কেমন মানুষ এরা! আমার বুঝে আসেনা।

একটা কথা এখন আমায় ভীষণ ভাবাচ্ছে-
আমি যে আলোকিত স্বপ্নটা দেখছি
সেটার উপর অত্যাচার হবেনা তো?
কেউ আবার মারধর করে স্বপ্ন দেখা'কে পাপ বলে জাহির করতে চাইবেনা তো?
বললে বলুক,আমি পিছিয়ে যাচ্ছিনা আর।
বুঝলে অনুপমা-
আমি একটা আলোকিত স্বপ্ন দেখেছিলাম
যে স্বপ্নে-
তুমি রাণী আর আমি রাজা ছিলাম।

কবিতাঃ আলোকিত স্বপ্ন
লেখকঃ ইসহাক মাহমুদ


Saturday, July 27, 2019

Love at first sight (প্রথম দর্শনে প্রেম)



"প্রথম দর্শনে প্রেম" 
লেখকঃ ইসহাক মাহমুদ  


রিক্সা থেকে ভার্সিটির গেইটের সামনে গিয়ে নামলাম। এবারও ভাড়া চুকিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা আমার কাঁধেই নিলাম। নিহা অনেক জোর করেছিলো ভাড়াটা নিজে দেওয়ার জন্য,কিন্তু আমার জন্য দিতে পারেনি। আমি ভিতরে ভিতরে ভাবতে লাগলাম,"সবেমাত্র তোমার রিক্সা ভাড়ার দায়িত্ব নিয়েছি,পুরোটা জীবন তোমার দায়িত্ব নেওয়ার জন্যেও আমি প্রস্তুত হয়ে আছি।" কোনো সুন্দরী রমণীর  প্রতি একবার ভালোবাসা জন্মে গেলে তার পুরোটা জীবনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য যুবকের মন চটপট করতে থাকে। মেয়েরা অবশ্য এই জিনিসটা খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারে,"কে তাকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখছে,কে তাকে কামুকতার দৃষ্টিতে দেখছে।" তাদের উপলব্ধি শক্তি প্রখর।

ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে এতক্ষণে ডিপার্টমেন্টের সামনে পৌঁছে গেলাম। আজ আর গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস টা করা হলো নাহ। রূপবতীদের জন্য এমন হাজারটা ক্লাস মিস দেয়া ই যায়,এতে ক্ষতির চেয়ে লাভ টা ই বেশি। ডিপার্টমেন্টের কেরানির কাছে গিয়ে নিহার ভর্তি প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করে দিলাম। এরপর বাহিরে বেরিয়ে এসে নিহাকে জিজ্ঞেস করলাম--

-- ভর্তি প্রক্রিয়া তো শেষ হলো,এবার কি করবে?

-- কি আর করবো,বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।

-- তোমাদের বাড়ি কোথায়?

-- কুমিল্লাতে।

-- কি বলো!! আমার বাড়িও তো কুমিল্লায়। কুমিল্লার কোথায়?

-- সুয়াগাজি উপজেলায়।

-- আমার আর তোমার বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি দূরে নাহ। ১৫/১৬ কিলোমিটার  হবে। আমাকেও বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে। চলো একসাথে যাওয়া যাক,কি বলো?

-- আচ্ছা চলেন। তবে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো করবো ভেবে এতক্ষণেও জিজ্ঞেস করা হলো নাহ।

-- কি কথা? বলে ফেলো নিঃসন্দেহে।

-- আমার নাম তো চুরি করেই মুখস্থ করে নিলেন। কিন্তু আপনার নাম টা তো জানা ই হলো নাহ। কি নাম আপনার?

-- অধমের নাম ইসহাক মাহমুদ। বন্ধুমহলে অবশ্য আরো কয়েকটা খ্যাতনামা নাম আছে,সেগুলো আজ না হয় গোপন-ই থাকুক৷ চলো এখন বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়া যাক।

-- আচ্ছা চলুন তাহলে।

বাড়ির উদ্দেশ্যে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসলাম। কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে গাড়ির দেখা মিললো। উঠে কোনোমতে বাসের পিছনে বাম কোণায় দুটো ফাঁকা সিট পেলাম। নিহাকে জানালার পাশে বসতে দিয়ে আমি তার পাশের সিটে বসলাম। মেয়েদের জানালার পাশের সিটেই মানায়,কেননা সেখানে বসলে বাতাসে তাদের কাজলকেশর উড়ার সুন্দর দৃশ্যটি উপভোগ করা যায়। চুলের মাতাল করা ঘ্রাণে নিজেকে হারিয়ে ফেলার অনুভূতি উপলব্ধি করা যায়। চলন্ত বাসে তার উড়ন্ত চুলের মাতাল করে গন্ধে নিজেকে একপ্রকার হারিয়েই ফেলেছিলাম। পাশাপাশি সিটে প্রায় ঘন্টাখানেক কাটিয়ে দিয়ে আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছালাম৷ বাস থামলেও আমার মন থামতে চাইছিলো নাহ। মন কেবল তার সাথে ছুটে যেতেই চাচ্ছিলো৷ সে যে আমার হৃদয়ে  প্রথম দর্শনে প্রেম জাগিয়ে তোলা রমণী। তারে ছেড়ে কি যাওয়া যায়!!

তার অজান্তেই একটা চিরকুটে আমার ফোন নাম্বার আর দুটো লাইন ছুড়ে এলাম তার কাধে থাকা ব্যাগে। যদি সে দেখতে পায়,তবে হয়তো তার চোখের সামনে সেই দুটো লাইন ভেসে উঠবে। যেখানে লেখা ছিলো -

"প্রথম দেখাতেই হৃদয়ে আমার করলে আক্রমণ,
তুমি আমার 'প্রথম দর্শনে প্রেম' জাগানো অতি আপনজন।"

অপেক্ষায় আছি,হয়তো সে ফোন করবে বলে। এমন একজনের জন্য চাইলে হাজার বছরও অপেক্ষা করা যায়। দূর থেকেও ভালোবাসা যায়৷ দুয়েক'শত মাইল দূর থেকেও তাকে কাছের মানুষ ভাবা যায়৷ বোকাসোকা ভাবলেও হাসতে হাসতে আপন ভাবা যায়৷ একান্তই নিজস্ব সম্পদ বলে দাবি করা যায়।

Wednesday, July 10, 2019

কে কার জন্য বেঁচে আছে


কে কার জন্য বেঁচে আছে
কে জানে!
উপরওয়ালা জুড়ি মিলাবেন
মন মানে।

কে কার জন্য দুঃখ পোষে
কে জানে!
মন-মহাজন সুখেই রাখবেন
মন মানে।

কে কার জন্য রাগ জমায়
কে জানে!
পরম দয়ালু শান্ত রাখবেন
মন মানে।

কে কার মনে আঘাত করে
কে জানে!
সৃষ্টিকর্তা ভালোই রাখবেন
মন মানে।

কে কার অধিকার চিনিয়ে নেয়
কে জানে!
সর্বশক্তিমান বিচার করবেন
মন মানে।

কে কার হৃদয়ে বসত করে
কে জানে!
প্রভু মোদের সুখের ঠিকানা দিবেন
মন মানে।

কবিতাঃ কে কার জন্য বেঁচে আছে
লেখকঃ ইসহাক মাহমুদ